সরকার ইতিমধ্যে প্রি-প্রাইমারি থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত নতুন কারিকুলামের রূপরেখা দিয়েছে। এর আঙ্গিকে নতুন করে সাজানো হচ্ছে বিষয়গুলো, পরীক্ষা, মুল্যায়ন এবং পাবলিক পরীক্ষা। নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী থাকছে না PECE এবং JSC – মানে ক্লাস ৫ এবং ৮ এর শেষে পাবলিক পরীক্ষা বাতিল করা হচ্ছে।
ক্লাস ১০ এর পর থাকছে প্রথম পাবলিক পরীক্ষা। সেটিও হবে কেবল ক্লাস ১০ এর সিলেবাসের উপর। এরপর ক্লাস ১১ এর পর একটা এবং ক্লাস ১২ এর পর আরেকটা – মোট দুটো পাবলিক পরীক্ষা হবে। এই দুই পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে হবে চূড়ান্ত মুল্যায়ন।
বদলে যাচ্ছে মুল্যায়ন পদ্ধতি
সম্পূর্ণ বদলে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের স্কুলে এবং পাবলিক পরীক্ষার মুল্যায়ন পদ্ধতি। প্রি-স্কুল থেকে ক্লাস ৩ পর্যন্ত শতভাগ মূল্যায়ন হবে স্কুলেই এবং থাকবে না কোন পরীক্ষা। ‘শিখনকালীন মুল্যায়ন’ মানে হচ্ছে ক্লাসের বিভিন্ন একটিভিটি, গ্রুপ ওয়ার্ক ইত্যাদির মাধ্যমে এই মূল্যায়ন করা হবে। ধীরে ধীরে বড় ক্লাসে পরীক্ষা চালু করা হয়েছে বটে, কিন্তু য়াগের মত নতুন ক্লাসে উঠার ক্ষেত্রে এবং পাবলিক পরীক্ষার নাম্বার কেবল প্রাধান্য পাচ্ছে না।
উপরের ছকে দেখলে বুঝতে পারবেন যে, নতুন কারিকুলামে ‘শিখনকালীন মুল্যায়নের’ উপর সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হয়েছে। যেমন, ক্লাস ৪-৫ এ মাত্র ৩০% নাম্বার যোগ হবে পরীক্ষার মাধ্যমে। মাধ্যমিক পর্যায়ে (৯ম-১০ম) শ্রেণীতেও কেবল মোট ৩৩% থাকবে ১০ম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষার নাম্বার। বাকি অংশ যোগ হবে ৯ম-১০ম শ্রেণীতে বিভিন্ন বিষয়ের স্কুলের বিভিন্ন কাজের পারফরমেন্সের উপর।
১০ম শ্রেণির ১০টি বিষয়ের মধ্যে ৫টি বিষয়ে পাবলিক পরীক্ষা হবে। এগুলো হলঃ বাংলা, ইংরেজি, গনিত, সামাজিক বিজ্ঞান ও বিজ্ঞান। বাকি ৫ টি বিষয় হচ্ছে – জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, ভালো থাকা, ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি। এই ৫টি বিষয়ের পুরো নাম্বার আসবে স্কুল থেকেই, শিক্ষার্থীর পুরো বছরের বিভিন্ন পারফর্মেন্সের উপর।
কি কি নতুন বিষয় যুক্ত হচ্ছে?
বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ইত্যাদি নিয়মিত বিষয়ের পাশাপাশি যুক্ত হতে যাচ্ছে ‘ভালো থাকা’ নামের একটা বিষয়। এছাড়া ‘শিল্প ও সংস্কৃতি’ বিষয়টিও যুক্ত হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে থাকছে ৮টি বই, এবং ক্লাস ৬-১০ পর্যন্ত বই থাকছে ১০টি করে। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং মূল্যবোধ ও নৈতিকতাকে রাখা হচ্ছে অন্যতম প্রধান শিখন ক্ষেত্র হিসাবে।
এখন থেকেই শুরু হোক প্রস্তুতি
সরকার থেকে ইতিমধ্যে শিক্ষকদের নতুন কারিকুলামের জন্য প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা করছে। সরকারি স্কুলগুলোর শিক্ষকরা এই প্রশিক্ষণের আওতায় আসবেন। নতুন কারিকুলামে মোট ১০ টি স্কিল নিয়ে কাজ করা হচ্ছে যেগুলো সম্পর্কে সব শিক্ষকদের খুব ভালো ধারণা তৈরি হতে হবে। আমরা নিয়মিতভাবে নতুন কারিকুলাম এবং এই সম্পর্কিত আপডেট দিচ্ছি আমাদের প্ল্যাটফর্মে। পাশাপাশি এই সম্পর্কিত দক্ষতাগুলো বাড়াতে ইতিমধ্যে আমাদের এখানে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কনটেন্ট দিয়েছি। বেসরকারি এবং সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা এখন থেকেই এই স্কিলগুলো নিয়ে নিজেদের প্রস্তুত করতে পারেন।