teaching
ছোটবেলা থেকেই আমাদের সমাজে শিক্ষকের মর্যাদা নিয়ে শিক্ষা দেয়া হয়। শিক্ষকের সম্মান পিতা মাতার সমতুল্যই ধরে নেয়া হয়। ধর্মীয় ও সামাজিক ভাবে শিক্ষকের সম্মান এবং মর্যাদার বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
এখন কথা হচ্ছে, শিক্ষক সম্মানের পাত্র এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু তাই বলে কি যে কেউ শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হলেই এই সর্বোচ্চ সম্মানের যোগ্য হয়ে যায়? আমরা যদি ছাত্রছাত্রীদের খেয়াল করে দেখি, সব শিক্ষকই তাদের কাছে সমান সম্মান পান না। এর কারণ খুজে নিজেদের যোগ্যতাকে উন্নত করতে পারলেই তবে একজন ভাল শিক্ষক হওয়া সম্ভব এবং সকলের সম্মান পাওয়া সম্ভব।
আমরা ছোট থেকে সবচেয়ে বেশি যে কথাগুলো শুনি তা হল – এটা ভুল, এটা হয়নি, এটা করবে না, তুমি কিচ্ছু পারনা, তোমাকে দিয়ে কিছু হবে না, ওকে দেখে শেখ ইত্যাদি।
একবার ভেবে দেখুন তো যখন আপনি কিংবা আমি এই কথাগুলো প্রতিনিয়ত শুনি, আমাদের মনের অবস্থা কি হয়, নিজের উপর কতটা রাগ হয়, আত্মবিশ্বাস কমতে থাকে এবং একসময় মনে হয় যে সত্যি আমাকে দিয়ে কিছু হবে না, আমি কিচ্ছু পারিনা। এভাবে ধীরে ধীরে নেতিবাচক কথাগুলো আমাদের মনোবল ভেঙ্গে দেয়, আমাদের লুকানো প্রতিভাগুলো নষ্ট করে।
একজন শিক্ষকের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে তার ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা এই নেতিবাচক মানসিকতা দূর করে তাকে বোঝাতে সক্ষম হওয়া যে –“আমিও পারি, আমিও পারব”।
আপনি কি জানেন যে একটি শিশুর বয়স ৪ হতে না হতেই সে প্রায় ৪ লক্ষ প্রশ্ন করে ফেলে?
জন্মের পর থেকেই তার চারপাশের সবকিছু নিয়ে জানার অদম্য আগ্রহ থেকেই শিশুর মনে এতো প্রশ্ন। আর আমাদের চারপাশের অজানা সব জিনিস জানার অন্যতম একটি উপায় হচ্ছে বিজ্ঞান সম্পর্কে জানা। আমাদের দেশে ক্লাস ৩ থেকে বিজ্ঞান শেখানো হয় শিশুদের। অথচ মজার বিষয় হচ্ছে গবেষণা বলছে ৫০ ভাগ পর্যন্ত শিশুরা তৃতীয় শ্রেণীতে উঠার আগেই বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। ভাবছেন এটা কি করে সম্ভব? ওরা তো এখনও বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনাই শুরু করলো না, তাহলে আবার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে কিভাবে?
Students learn best when it’s interesting, engaging and fun. And learning is all about using your brain. In recent times, scientists discovered amazing findings how human brain works and how people learn. Then why don’t we use the findings and use them to teach children in schools?
শিশু মাতৃগর্ভে থাকাকালিন সময় থেকেই মা বাবারা তার লালন পালন থেকে শুরু করে ভবিষৎ নানা পরিকল্পনা নিয়ে খুব ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আর শিশু জন্মের পর সেই পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নে নেমে পড়েন। অন্য সব মা বাবাদের মত প্রতিটা মা বাবাই তার সন্তানকে সুন্দর একটা আগামীর পথযাত্রী দেখতে চায়। ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়, অন্যের জন্য ভালো […]
“If you want to change your world, Please change your first five”- শিশুর জন্মের প্রথম ৫/৬ বছর মা-বাবাই শিশুর জীবনে সব। শিশু তার বাবা-মা’কে অনুকরণ করে বেড়ে ওঠে। বাবা-মা’র ইতিবাচক ও আত্মবিশ্বাসী আচরণ শিশুকেও ইতিবাচক হতে শেখায়।তাই ঘুরে ফিরে অভিভাবকত্বের কথাই চলে আসে। মা-বাবাই পারেন শিশুকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে এবং তাদের এই মূল্যায়নটুকুই শিশু সারাজীবন বহন করে। যা শিশুটিকে আত্ননির্ভরশীল হতে সহায়তা করে।
জীবন প্রতিশ্রুতিপুর্ণ। আমারা প্রতিদিনই প্রায় কিছু না কিছুর সাথে অঙ্গীকারবদ্ধ হই। সুন্দর সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হোক সেটা ব্যক্তিগত, সামাজিক কিংবা কর্মক্ষেত্রে। বিভিন্ন সময়েই আমরা আমাদের নানা কাজ সম্পাদনের জন্য অথবা লক্ষ্য নির্ধারণ এবং অর্জনে নানান প্রতিশ্রুতি নিয়ে ও দিয়ে থাকি।
প্রমিস বা কথা দিয়ে কথা না রাখতে পারার ফলে অনেক ভালো সম্পর্ক খারপ হয়ে ওঠে। এমনকি কথা না রাখা সেই মানুষ আর তার সাথে সম্পর্কে অবিশ্বাসের সৃষ্টি হয়। তাই আমাদের উচিৎ কাউকে করা প্রতিশ্রুতি বা প্রমিস রক্ষা করা। তবে অনেক সময় দেখা যায় শুধু অন্যের দিক বিবেচনা করে, কাউকে সাময়িক সময়ের জন্য খুশি করার ক্ষেত্রে আমরা এমন কিছু কথা বা প্রমিস করে থাকি যেগুলো পরবর্তিতে পূরণ করা আমাদের জন্যই খুব কষ্টের হয়ে দাঁড়ায়। সুতরাং কোনো কিছু অঙ্গিকার করার আগে তা পূরণ করা সম্ভব কিনা তা মাথায় রাখতে হবে।
প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ক্ষেত্রেঃ
- অন্যের অনুভূতি বিবেচনা করুন। যেমন, আপনি যদি কারো প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন তবে তাদের অনুভূতিগুলি তারা কীভাবে অনুভব করবে তা বিবেচনা করুন।
- আপনি কতোটুকু সক্ষম তা ভেবে নিন। আপনার দেওয়া কথা রাখতে আপনি কী করতে পারবেন এবং কী করতে পারবেন না তা জেনে নিন। বার বার ভাবুন, প্রয়োজনে নিজের সমস্যাগুলো তার সাথে আলোচনা করতে পারেন।
- আপনার কথাটি আপনার ‘বন্ধন’। তাই এটিকে পূরণ বা রক্ষায় গুরুত্ব দিন।
- সম্পর্ক বিবেচনা করে প্রতিশ্রুতি দিন।
- শুধুমাত্র অন্যকে সন্তুষ্ট করার জন্য কাউকে কোনো কিছু প্রমিস না করাই শ্রেয়। এতে সম্পর্ক নষ্ট হয় এবং তা অবিশ্বাসের জন্ম দেয়।
- “Action speaks louder than words” – প্রচেষ্টা করুন, হতে পারে কাজটি সহজ নয় তবে কঠিন কাজটির মধ্যে কিছুটা হলেও পার্থক্য তৈরী করে দেবে আপনার করা চেষ্টাগুলো।
- আপনি প্রতিশ্রুতি দেওয়ার আগে সমগ্র বিষয়গুলি নিয়ে চিন্তা করুন ( আপনার সক্ষমতা,প্রতিশ্রুতি পূরণে কি কি বাধা আসতে পারে,সম্পর্কে এর প্রভাব এবং এর ফলাফল)
প্রতিশ্রুতিগুলোই আমাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক আর কর্মক্ষত্রের সম্পর্ককে সুন্দর করে তোলে, সুন্দর এই সম্পর্কগুলো টিকিয়ে রাখতে চাইলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন নিজেদের মধ্যে অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়া, আর সেই প্রতিশ্রুতিগুলো মেনে চলা। তাহলেই দৃঢ় হবে আত্মবিশ্বাস, সুন্দর হবে সুসম্পর্কের সূচনা ও পথচলা।
টিচিং লার্নিং মেটেরিয়েল বা এইড, কিংবা শিখন উপকরণ বলতে সেই জিনিস/বস্তু বা রিসোর্স বোঝায় যেগুলো একজন শিক্ষক তার ক্লাসে পড়ানোর জন্য ব্যবহার করেন। টিচিং লার্নিং মেটেরিয়েলে বিভিন্ন বৈচিত্র্য থাকতে পারে তবে একটা কমন বিষয় হলো যেকোন টিচিং লার্নিং মেটেরিয়েলই শেখার ক্ষেত্রে সহায়তা করে। সাধারণত টিচিং লার্নিং মেটেরিয়েলগুলো বানানোর সময় যে বিষয়গুলো নির্ভর করে সেগুলো হলো- কি বিষয়ের কোন টপিক পড়াচ্ছেন, কোন ক্লাসের শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন, তাদের আগ্রহ ও শেখার ধরণ কেমন। টিচিং লার্নিং মেটেরিয়েল বিভিন্ন ধরণের হতে পারে যেমন- বাস্তব উপকরণ, ভিজ্যুয়াল মডেল, ম্যানিপুলেটিভ, ওয়ার্কশিট ইত্যাদি।
শিক্ষকতাই পৃথিবীতে একমাত্র পেশা যেখানে একই সাথে আপনাকে বিভিন্ন ধরণের ভূমিকা পালন করতে হয় ক্লাসে ও ক্লাসের বাইরে যার উপরে নির্ভর করে শিক্ষার্থীদের শেখা এবং ভবিষ্যত। এই জন্য আমাদের প্রিয় মানুষদের তালিকা করতে গেলে বাবা-মায়ের পরে প্রথমেই আসে আমাদের শিক্ষকের নাম, যারা আমাদের নতুন জীবনের সন্ধান দেন। লেখাটি পড়ে চোখ বন্ধ করে একবার ভাবুন আপনার প্রিয় শিক্ষকের কথা যে আপনার জীবনের অনুপ্রেরণা। আপনি কি চান আপনার অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীদের অনুপ্রেরণা হতে? কারন এই দুর্লভ ক্ষমতা শুধু আপনারই আছে।
আমার হাতে যদি ক্ষমতা থাকতো, তাহলে নিত্যনতুন চিন্তা বেশি না করে সারাদেশে আমার শিক্ষকেরা যে ভালো কাজগুলো করছেন, সেগুলো জাতির সামনে তুলে ধরতাম। আর এমন ব্যবস্থা করতাম, যাতে এই ভালো কাজগুলো সবার মধ্যে ছড়িয়ে যায়। কী কী ঠিক মতো হচ্ছে না, সেটি বেছে বের করতে গেলে হয়তো কম্বলসহ উজাড় হয়ে যেতে পারে। তাই চমক দেখানোর জন্যেও সে ভুল আমি করতাম না।
সুদেব কুমার বিশ্বাস: পেশায় শিক্ষাজীবী। কাজ করেন একটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থায়।